নিজস্ব প্রতিবেদক
গণবিরোধিতার কারণে বিশেষ গোষ্ঠীকে দেশের মানুষ অনেক আগেই হলুদ কার্ড দেখিয়েছে; আর মিডফোর্টের ঘটনায় তাদেরকে জনগণ লালকার্ড দেখানোর কাজ সম্পন্ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ সোমবার বিকাল ৫.৩০ টায় পল্লবীর ২ নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিট দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য এবং পল্লবী জোন পরিচালক অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইফসুর সেক্রেটারি জেনারেল ড.মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ । বক্তব্য রাখেন রূপনগর থানার আমীর আবু হানিফ, পল্লবী দক্ষিণ থানার আমীর আশরাফুল আলম, পল্লবী মধ্য থানার আমীর রইসুল ইসলাম পবন,পল্লবী উত্তর থানার আমীর মাওলানা সাইফুল কাদের প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন এর নেতৃত্বে পল্লবী থেকে শুরু হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গিয়ে শেষ হয়।
সেলিম উদ্দিন বলেন, তথাকথিত প্রথাগত রাজনীতি দেশ ও জাতিকে কিছুই দিতে পারেনি বরং এ বস্তাপচা রাজনীতি দেশের মানুষকে খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজী, রাহাজানী, টেন্ডারবাজী, দুর্নীতি ও লুটপাট উপহার দিয়েছে। কথিত রাজনীতির ধারক-বাহকরা কথিত রাজনীতির মাধ্যমে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেওয়ার কাজে সব সময় ব্যস্ত থেকেছে। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে একটি ইতিবাচক ও মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। ফলে অপরাজনীতির ধারক- বাহকরা এখন অসহায় ও এতিম হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন। তাদের এখনকার স্লোগান হলো, ‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার’। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত, এ স্লোগান বাস্তবায়ন হলে তাদেরই একদলকে দিল্লি ও অপর দলকে পিন্ডি যেতে হবে।
কারণ, রাজাকারের তালিকায় তাদের নাম অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। তিনি সংশ্লিষ্টদের নেতিবাচক রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে এসে ইতিবাচক রাজনীতি শুরু করার আহবান আহবান জানান। অন্যথায় জনগণ তাদেরকে অবশ্যই প্রত্যাখান করবে।
তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের হাতে একটা মোক্ষম সুযোগ এসেছিলো। ইচ্ছা করলেই তারা তাদের দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি এবং ইসলামী অনুশাসন মেলে চলার জন্য প্রস্তুত করতে পারতো। কিন্তু তারা সে পথে অগ্রসর না হয়ে দেশকে চাঁদাবাজের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। তাদের এখন স্লোগানই হলো, ‘চাঁদা দিলে পুরষ্কার, না দিলে বহিস্কার’। আর মিডফোর্টের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা তাদের দলীয় ইস্তেহারই প্রকাশ করেছে। তাদের দলের চাঁদাবাজী ও দখলদারি নিয়ন্ত্রণ এবং অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইতোধ্যেই নিজ দলে দেড় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি তাদের চাঁদাবাজী, দখলবাজী সহ সকল প্রকার অপরাধ প্রবণতা বন্ধ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করার আহবান জানান। অন্যথায় তাদেরকে রাজনীতির ময়দান থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে হবে।
মহানগরী উত্তর আমীর পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, অপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া আপনাদের কাজ। তাই আপনার জনগণের সাথে আওয়ামী-বাকশালী পুলিশের মত আচরণ করবেন না। মিডফোর্টের ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা নিজ দলীয় কর্মী মেনে নিয়ে নিজেরাই তাদেরকে বহিস্কার করেছে। অথচ পুলিশ তাদের দলীয় পরিচয় খুঁজে পাচ্ছে না। এসব দালল পুলিশদের নির্বাচনকালীন কোন দায়িত্বে রাখা যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তিনি দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সুশাসন ও ন্যায়- ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে আগামী ১৯ তারিখের জাতীয় সমাবেশ সফল করতে সকলকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানান।